নিউইয়র্ক, ২৩ অক্টোবর : নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক ভিন্নতর বার্তা দিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি যদি তাঁর দল পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানের ভিত্তিতে।
ডা. রহমান বলেন, “মানুষ নিজের বাসা বদলাতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে সম্মান করতে চাই, একইভাবে তাদের কাছ থেকেও পারস্পরিক সম্মান প্রত্যাশা করি।” সপ্তাহব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন বুধবার (২২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারত প্রসঙ্গে জামায়াত আমির আরও বলেন, “ভারত বাংলাদেশের তুলনায় বিশাল দেশ। সম্পদ, ভূমি, জনসংখ্যা সব দিক থেকেই শক্তিশালী। আমরা তাদের মর্যাদা দিতে চাই। কিন্তু আমাদের ছোট্ট দেশ, ১১৮ মিলিয়ন মানুষ। এটাকেও যেন তারা মর্যাদা দেয়, সেটাই আমাদের দাবি। পারস্পরিক সম্মান থাকলে দুই প্রতিবেশী শুধু ভালো থাকবে না, বরং একে অন্যের কারণে বিশ্ব দরবারেও সম্মানিত হবে।”
আলোচনার এক পর্যায়ে জামায়াতের ইতিহাস প্রসঙ্গে এসে তিনি আবারও জাতির কাছে ক্ষমা চান। তাঁর ভাষায়, “১৯৪৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের কর্মকাণ্ডে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, আমি বিনা শর্তে তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইছি।” এ নিয়ে টানা তিনবার জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনা এটি। ডা. রহমান বলেন, “মাফ চাইলে অনেকে বলেন এই ভাষায় মাফ চাওয়া ঠিক না, ওই ভাষায় চাইতে হবে এ যেন নতুন এক যন্ত্রণা। আমি আজ আবারও স্পষ্ট করে বলছি, ১৯৪৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের দ্বারা কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, আমরা বিনা শর্তে ক্ষমা চাই।”
জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে পিআরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে গণভোট আয়োজন করা উচিত।” তিনি জানান, “রমজানের আগেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি; কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা নেই।”
জাতীয় ঐক্যের প্রসঙ্গ টেনে জামায়াত আমির বলেন, “আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সভ্যতা—সবই মিলেমিশে থাকার শিক্ষা দেয়। যে কয়েকটি কালো অধ্যায় আছে, সেগুলো মুছে ফেলব ইনশাআল্লাহ, যাতে দল-ধর্মের বিভাজনে জাতি আর বিভক্ত না হয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এখন মেজরিটি-মাইনোরিটির ধারণা মানি না; আমরা বলি ‘উই নিড ইউনিট’। বিভাজন মানেই সংঘাত যেটা আমরা দীর্ঘ ৫৪ বছর দেখেছি, আর সেটা দেখতে চাই না।”
সভা শেষে তিনি আশ্বাস দেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সংবিধানসম্মত অধিকারের ভিত্তিতে দেশের সংখ্যালঘুরা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan